- বাপুজির টিফিনকেকের ওপর চার চামচ পোর্ট ওয়াইন ঢেলে খেয়ে দেখেছিস? অমৃত। রন্ধ্রে রন্ধ্রে রস
- রস? রসের নামে ছাইপাঁশ খাবেন কেন স্যার?
- কেনো রে? তুই বুঝি এসব চাখিসনি! ন্যাকামো হচ্ছে? মেয়ে বলে তুই এক্কেরে লবঙ্গলতিকা বুঝি?
- না, মানে সেরকম ঠিক….
- সত্যি করে বল দিকি
- গেল বছর দোলের দিন স্যার, দাদারা খাচ্ছিল, একবার উঠেছিল, আমি গিয়ে বোতল থেকে এক চুমুক….
- সে কি রে? সোজা বোতল থেকে? বলিস কি?
- জ্বলে গেছিল স্যার, গলা বুক জ্বালা, কি ভয়ংকর, চোখে অন্ধকার দেখছি
- তার পর? অজ্ঞান হয়ে গেলি?
- যেতাম, কিন্তু দাদা এমন থাবড়া মারল… জানেন, আমি কলেজে পড়ি তাও আমাকে একরকম করে বদমাশ টা
- বুঝেছি। তার মানে খাসনি।
- হি হি। খেয়েছি। পরে। সন্ধ্যেবেলা। ওই বজ্জাতটাই স্প্রাইটের সঙ্গে মিশিয়ে, লেবু চিপে কিসব করে দিল। কি ভাল।
- তোর দাদাটা তোকে সত্যি ভালবাসে।
- আপনি বাসেন না?
- আমি? আমি তো তোর মাস্টার
- মাস্টাররা ভালবাসে না ছাত্রীদের?
- সে তো আমি…. তোদের সবাইকেই…. মানে…ইয়ে
- তোতলাচ্ছেন কেন?
- কই? তোতলাইনি তো? আমি কি ইয়ে?
- আপনি আমাকে ভয় পান স্যার?
- তুই একটা পুঁচকে মেয়ে, তোকে ভয় পাবো কেন?
- পান তো, নইলে বিকেলে আমি ফোন করে আসব বললুম, আর আপনি কেমন প্যাঁচার মত গলা করে ব্যাস্ত আছেন বললেন
- তুই কি সে কথা শুনলি? ধেই ধেই করে হাজির হলি।
- আর আপনি আমাকে মাখন দিয়ে চা, থিনারুট বিস্কুটে মধু, পান্তা ভাতে চানাচুর, হুইস্কিতে ভেজানো ধানি লংকা, বাপুজির কেকে পোর্ট ওয়াইন এই সব গল্প করছেন
- তুই বুঝি পড়তে এসেছিস? বই খাতা কই? ব্যাগ কই?
- আপনি অত্যন্ত বাজে একটা লোক
- জানি তো। তাই এসব গপ্প করছি
- আমি সেই কথা বলিনি। আপনি সব বোঝেন। বোঝেন না?
- কাঁসিও ভাল ঢাক্ও ভাল,
টিকিও ভাল টাকও ভাল,
ঠেলার গাড়ী ঠেল্তে ভাল,
খাস্তা লুচি বেলতে ভাল,
গিট্কিরি গান শুনতে ভাল,
শিমুল তুলো ধুন্তে ভাল,
ঠাণ্ডা জলে নাইতে ভাল,
কিন্তু সবার চাইতে ভাল-
পাউরুটি আর ঝোলা গুড় ।
- মানে?? এ আবার কি?
- সুকুমার রায় পড়িসনি বুঝি? ভাল রে ভাল, সব ভাল। এত কিছু ভাল। মানুষকে ভালবাসা ভাল। কিন্তু ওই যে - "সবার চাইতে ভাল পাউরুটি আর ঝোলা গুড়"
- কিচ্ছু বুঝিনা আপনার হেঁয়ালি।
- ওই পাউরুটি আর ঝোলাগুড়েই ভাল থাকি রে। থাকতে হয়। আধবুড়ো বয়সে পেটে পোলাও কালিয়া সহ্য হবে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন